আযান ও একামত: সাফল্যের পথে উদাত্ত আহবান

আযান ও ইকামাত: সাফল্যের পথে উদাত্ত আহবান

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

প্রিয় বন্ধু, আযানের আওয়াজ কানে আসার সাথে সাথে মুমিনের হৃদয়ে এক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। শত ব্যস্ততার মধ্যেও তার মন ছুটে যায় মসজিদ পানে। কবি কায়কোবাদ যথার্থই বলেছেন:

কে ওই শোনাল মোরে আযানের ধ্বনি।

মর্মে মর্মে সেই সুর, বাজিল কি সুমধুর

আকুল হইল প্রাণ, নাচিল ধমনী।

কি মধুর আযানের ধ্বনি!

আমি তো পাগল হয়ে সে মধুর তানে,

কি যে এক আকর্ষণে, ছুটে যাই মুগ্ধমনে

কি নিশীথে, কি দিবসে মসজিদের পানে।

অত:এব আসুন, আমরা আযান ও তার সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয় একামত সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি। এই পোস্টে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো আলোচিত হয়েছে:

১) আযান ও ইকামতের অর্থ:

২) আযান ও ইকামাত কিভাবে শুরু হল এবং সেগুলোর পদ্ধতি কি?

৩) আযান ও ইকামতের সুন্নাত সমূহ।

   ক) আযানের ক্ষেত্রে সুন্নাত।

   খ) মুআয্‌যিনের ক্ষেত্রে সুন্নাত।

   গ) আযান যারা শুনবে তাদের জন্য করণীয়।

   ঘ) আযানের দুয়া ও তার ফযীলত।

৪) আযান দেয়ার ফযীলত ও মুয়াযযিনের মযার্দা।

তাহলে উপরোক্ত পয়েন্ট সমূহের আলোকে আলোচনা শুরু করা যাক:

১। আযানঃ আযান হলো নামাযের সময় সম্পর্কে ঘোষণা দেয়া।

আযান আল্লাহর অস্তিত্ব ও তাঁর পূর্ণতা এবং মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম)এর রিসালাতের শ্রেষ্ঠত্বের ঘোষণা দেয়। মুক্তি ও কল্যাণের প্রতি আহবান জানায়। আল্লাহ্‌র একত্ববাদ এবং তিনি অংশীমুক্ত একথা দৃঢ় ভাবে প্রমাণ করে।

আযান হলো ইসলামের একটি বাহ্যিক নিদর্শন। আযানের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রতি আহবান জানানো হয়।

ইকামত হলো: নামাযে প্রবেশ করার জন্য ঘোষণা দেয়া।

 ২। আযান ও ইকামাত কিভাবে শুরু হল এবং সেগুলোর পদ্ধতি কি?

হিজরতের প্রথম বছরে আযান শরীয়তভূক্ত হয়। মুসলমানগণ প্রথমে অনুমানের ভিত্তিতে নামাযের জন্য একত্রিত হতেন। অতঃপর ইসলামে আযান এল এক নামাযের সময়কে অপর নামাযের সময় থেকে পার্থক্য করার জন্য। এটি মুসলমানদের একটি সুন্দর নিদর্শন। এর মাধ্যমে তারা অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের উপাসনা থেকে নিজেদের ইবাদতকে পার্থক্য করতে সক্ষম হয়েছে।

আবদুল্লাহ্‌ ইবনে যায়েদ ইবনে আবদে রাব্বেহী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) নামাযে মানুষকে একত্রিত করার জন্য নাকূস বা ঘন্টা বাজানোর নির্দেশ দিলেন। তখন এক রাত্রে আমি স্বপ্নে দেখি যে, জনৈক ব্যক্তি হাতে একটি নাক্বুস (ঘন্টা) বহণ করছে। আমি তাকে বললামঃ হে আল্লাহ্‌র বান্দা! তোমার নাক্বুসটি কি বিক্রয় করবে? লোকটি বললঃ এটা দিয়ে তুমি কি করবে? আমি বললামঃ এর মাধ্যমে মানুষকে নামাযের দিকে আহবান করব। সে বলল, আমি কি তোমাকে এর চাইতে উত্তম পন্থা শিখিয়ে দেব? আমি জবাব দিলামঃ হ্যাঁ, শিখিয়ে দাও। লোকটি বললঃ তুমি এরূপ বলঃ

الله أكبر، الله أكبر، الله أكبر، الله أكبر، أشهد أن لاإله إلاالله، أشهد أن لاإله إلاالله، أشهد أنَّ محمدًا رَسُوْلُ اللهِ، أشْهَدُ أنَّ محمداً رسول الله، حيَّ عَلىَ الصَّلاَةِ، حي على الصلاة، حي على الفَلاَحِ، حي على الفلاح، الله أكبر، الله أكبر، لاإله إلا الله.

উচ্চারণঃ আল্লাহু আক্‌বার, আল্লাহু আক্‌বার, আল্লাহু আক্‌বার, আল্লাহু আক্‌বার, আশহাদু আল্লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ্‌, আশহাদু আল্লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ্‌, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার্‌ রাসুলুল্লাহ্‌, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার্‌ রাসুলুল্লাহ্‌, হাইয়্যা আলাস্‌সালাহ্‌, হাইয়্যা আলাস্‌সালাহ, হাইয়্যা আলাল্‌ ফালাহ, হাইয়্যা আলাল্‌ ফালাহ, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার। লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ্‌।

অতঃপর লোকটি সামান্য পিছনে সরে গেল। তারপর বলল, যখন নামাযের ইকামত দিবে তখন বলবে:

الله أكبرالله أكبر، أشهد أن لاإله إلاالله،  أشهد أن محمدا رسول الله، حي على الصلاة، حي على الفلاح، قد قامت الصلاة، قد قامت الصلاة. الله أكبرالله أكبر، لاإله الإ الله.

প্রভাতে আমি রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এর দরবারে এসে তাঁকে এ স্বপ্ন সম্পর্কে সংবাদ দিলে তিনি বললেনঃ ‘আল্লাহ চাহে তো ইহা সত্য স্বপ্ন। উঠ, বেলালকে (রাঃ) এই কথাগুলো শিখিয়ে দাও। সে আযান দিবে। কেননা, বেলালের কন্ঠ স্বর তোমার চাইতে বেশী উঁচু।” (আবু দাউদ, তিরমিযি ও ইবনু মাজাহ্‌)

উল্লেখিত আলোচনায় আযানের বাক্য এবং ইকামতের বাক্য সমপর্কে অবগত হওয়া গেল। ফজরের আযানের সময় ‘হাইয়্যা আলাল্‌ ফালাহ্‌’ বলার পর  الصلاة خير من النوم ‘আস্‌সালাতু খাইরুম মিনান্নাওম’ দু বার বলবে। (ইবনু মাজাহ্‌)

৩) আযান ও ইকামতের সুন্নাত সমূহ:

(ক) আজানের ক্ষেত্রে সুন্নাত হলঃ

(1)   আযানের শব্দগুলো তারতীল তথা উচ্চ কণ্ঠে ধীরস্থীর ভাবে বলা।

(2)  হাইয়্যা আলাস্‌সালাহ্‌ বলার সময় ডান দিকে এবং হাইয়্যা আলাল্‌ ফালাহ্‌ বলার সময় বাম দিকে মুখ ফেরাবে।

(3) তারজী করা। অর্থাৎ ‘আল্লাহু আকবার’ বলার পর নীচু কণ্ঠে আশহাদু আল্লাইলাহা ইল্লাহ্‌ ও আশহাদু আন্না মুহাম্মদার রাসুলুল্লাহ দুবার করে বলবে। অতঃপর আবার সেগুলো উঁচু আওয়াজে দু বার করে বলবে। (এ বিষয়টি নিয়ে ওলামাগণের মাঝে মত বিরোধ রয়েছে। একদল ওলামার মতে এটি সু্ন্নাত)

(4)   আযান কোন উঁচু স্থানে দেয়া।

 (খ) মুআয্‌যিনের ক্ষেত্রে সুন্নাত হলঃ

তিনি উঁচু আওয়াজ বিশিষ্ট ও বিশ্বস্থ হবেন। সময় সমপর্কে পূর্ণ আবগতি থকাবেন। আযানের বিনিময়ে কোন পারিশ্রমিক গ্রহণ করবেন না। ঊছমান বিন আবুল আছ (রা:) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,

قلت: يارسول الله!اجعلني أمام قومي, فقال أنت أمامهم, واقتل بأضعفهم,  واتخذ مؤذنا لا يأخذ على أذانه أجرا

“আমি বললামঃ হে আল্লাহ্‌র রাসূল আমাকে আমার গ্রামের ইমাম বানিয়ে দিন। তিনি বললেনঃ ‘তুমি তাদের ইমাম। দুর্বল লোকদের প্রতি খেয়াল রাখবে। একজন মুআয্‌যিন নির্ধারণ করবে, যে আযানের বিনিময়ে কোন পারিশ্রমিক গ্রহণ করবে না।” (নাসাঈ ও আবু দাঊদ)

(গ) যারা আযান যারা শুনবে তাদের জন্য করণীয়:

আযান শুনে প্রত্যেকেই তার জবাবে হুবহু আযানের শব্দগুলো মুখে উচ্চারণ করবে।  মুয়াযযিন ফজরের আযানের সময় যখন আস্‌সালাতু খাইরুম্‌ মিনান্নাওম বলবে তখন শ্রোতাও তাই বলবে। তবে হাইয়্যা আলাসসালাহ, ‘হাইয়্যা আলাল্‌ ফালাহ’ বলার সময় বলবেঃ  لاَحَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إلاَّبِاللهِ  ‘লা-হাওলা ওয়ালা- ক্বুয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।’

(ঘ) আযানের দু ও তার ফযীলত:

আযান শেষ হওয়ার পর মুআয্‌যিন ও শ্রবণকারী সকলের জন্য নিম্ন লিখিত দুআগুলো পড়া সুন্নাতঃ

১) রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘যখন তোমরা মুআয্‌যিনের আযান শুনবে তখন জবাবে আযানের শব্দগুলো অনুরূপভাবে মুখে উচ্চরণ করবে। তারপর আমার উপর দরূদ পাঠ করবে। কেননা যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পাঠ করবে, আল্লাহ্‌ তার উপর দশবার রহমত নাযিল করবেন। অতঃপর আমার জন্য আল্লাহ্‌র কাছে অসীলার প্রার্থনা কর। অসীলা জান্নাতের একটি স্তরের নাম যা আল্লাহ্‌র বান্দাদের মধ্যে শুধু একজর বান্দার জন্যই সমিচীন। আশা করি আমিই সে ব্যক্তি। যে ব্যক্তি আমার জন্য অসীলার প্রার্থনা করবে, তার জন্য আমার শাফায়াত আবশ্যক হয়ে যাবে।” (ছহীহ মুসলিম)

২) জাবের (রা:) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ “যে আযান শুনে এই দুআ পাঠ করবে:

اللهم رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ وَالصَّلاَةِ القَائِمَةِ آتِ مُحَمَّداً الْوَسِيْلَةَ وَ الفَضِيْلَةَ وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَحْمُوْداً الَّذِيْ وَعَدْتَهُ

“হে আল্লাহ্‌ এই পরিপূর্ণ আহবান এবং এই প্রতিষ্ঠিত নামাযের তুমিই প্রভূ। মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম)কে দান কর সর্বোচ্চ সম্মানিত স্থান এবং সুমহান মর্যাদা। তাঁকে প্রতিষ্ঠিত কর প্রশংসিত স্থানে যার অঙ্গিকার তুমি তাঁকে দিয়েছো।” তার জন্য কিয়ামত দিবসে আমার শাফাআত আবশ্যক হয়ে যাবে।” (বুখারী)

৩) তারপর বলবে:

 

أشهد أن لا أله ألا الله وحده لا شريك له , وأن محمداً عبده ورسوله، رَضِيْتُ بِاللهِ رَبًّا وَ بِالاِسْلاَمِ دِيْنًا وَ بِمُحَمَّدٍ رَسُوْلاً

 অর্থ: “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ্‌ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই। তিনি একক তাঁর কোন শরীক নেই। এর্ব নিশ্চয় মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল। আমি আল্লাহ্‌কে প্রতিপালক, ইসলামকে জীবন ব্যবস্থা এবং মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম)কে রাসূল হিসেবে মেনে নিয়েছি।”

রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি উক্ত দুআ পাঠ করবে, তার গুনাহ ক্ষমা করা হবে।(মুসলিম)

৪) এরপর নিজের প্রয়োজন অনুসারে যা খুশি দুআ করবে। রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বলেন,

لاَ يُرَدُّ الدُّعاَءُ بَيْنَ الأذاَنِ وَالإقاَمَةِ

“আযান এবং ইক্বামতের মধ্যবর্তী সময়ের দুআ ফিরিয়ে দেয়া হয় না।” (আবু দাঊদ, তিরমিযী)

 

নামাযের সময় হওয়ার পূর্বে আযান দেয়া সঠিক নয়। কেননা রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বলেন: “যখন নামাযের সময় উপস্থিত হয় তখন তোমাদের মধ্যে একজন আযান দিবে এবং যিনি বড় তিনি ইমামতি করবেন।” (বুখারী, মুসলিম)

ইকামতের ক্ষেত্রে সুন্নাত হল- শব্দগুলো দ্রুত বলা।

 ৪) আযান দেয়ার ফযীলত ও মুয়াযযিনের মযার্দা:

মুআয্‌যিনের জন্য অনেক ছওয়াব ও পুরষ্কার রয়েছেঃ

1)                 মুআয্‌যিনের আওয়াজ যতদূর পৌঁছে ততদূর পর্যন্ত তাকে ক্ষমা করা হবে এবং তার সাথে যারা ছালাত আদায় করবে, তাদের ছালাতের অনুরূপ তাকে ছওয়াব দেয়া হবে। (অর্থাৎ- সকল মানুষ, জিন, তরুলতা, প্রাণী ইত্যাদী তার জন্য ক্ষমা প্রর্থনা করে এবং আল্লাহ্‌ তাকে ক্ষমা করেন। বা এর অন্য অর্থ হলো, যেস্থান পর্যন্ত তার আওয়াজ পৌঁছে  সেস্থান পর্যন্ত যদি পাপে পূর্ণ থাকে তবে তাও ক্ষমা করে দেয়া হবে।)

রাসুলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বলেন:

إنَّ اللهَ وَمَلاَئِكَتُهُ يُصَلُّوْنَ عَلىَ الصَّفِّ الْمُقَدَّمِ , وَالْمُؤَذِّنُ يُغْفَرُ لَهُ بِمَدِّ صَوْتِهِ , وَيُصَدِّقُهُ مَنْ سَمِعَهُ مِنْ رَطَبٍ وَ ياَبِسٍ ،وَلَهُ مِثْلُ أجْرِ مَنْ صَلَّى مَعَهُ

“নিশ্চয় আল্লাহ্‌ রহমত নাযিল করেন এবং ফেরেশ্‌তারা রহমাতের দুআ করেন অগ্রবর্তী কাতারের জন্য। মুআয্‌যিনের কন্ঠ যতদূর পৌঁছে ততদূর তাকে মাফ করা হয়। এবং প্রত্যেক সজীব নির্জীব তার জন্য স্বাক্ষ্য দান করে। আর যারা তার সাথে ছালাত আদায় করে তাদের অনুরূপ তাকে প্রতিদান দেয়া হয়।”  (নাসাঈ)

2)                 মানুষ, জিন, বৃক্ষ-লতা এবং জড় বস্তু যারাই তার কন্ঠের আযান শুনে, তারা সবাই তার জন্য সাক্ষ্য দানকারী হবে। রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) আবু সাঈদকে করেনঃ

إنِّيْ أرَاكَ تُحِبُّ الْغَنَمَ وَالباَدِيَةَ, فَإذاَ كُنْتَ فِيْ غَنَمِكَ أوْ باَدِيَتِكَ فَأذَّنْتَ لِلصَّلاَةِ فَارْفَعْ صَوْتَكَ بِالنِّداَءِ, فَإنَّهُ لاَ يَسْمَعُ مَدَى صَوْتِ الْمُؤَذِّنِ جِنٌّ وَلاَ إنْسٌ وَلاَ شَيْءٌ إلاَّ شَهِدَ لَهُ يَوْمَ الْقِياَمَةِ

“মনে হচ্ছে তুমি গ্রামে থাকতে এবং ছাগল চরাতে বেশী ভালবাস। যখন তুমি ছাগল চরাবে বা গ্রামে থাকবে তখন ছালাতের জন্য উচ্চ কন্ঠে আযান দেয়ার চেষ্টা করবে। কেননা মুআয্‌যিনের আযান ধ্বনি মানুষ, জিন বা কোন বস্তু যেই শুনবে সবাই কিয়ামত দিবসে তার জন্য সাক্ষ্যদানকারী হবে।” (বুখারী)

3)                রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বলেন, (الْمُؤَذِّنُوْنَ أطْوَلَ النَّاسِ أعْناَقاً يَوْمَ الْقِياَمَةِ) মুয়ায়যিনগণ কিয়ামত দিবসে সর্বোচ্চ কাঁধ বিশিষ্ট হবে। (অর্থাৎ সবাই তাদেরকে চিনতে পারবে।) (মুসলিম)

4)                 তার জন্য জান্নাত আবশ্যক হয়ে যাবে। রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বলেন,

مَنْ أذَّنَ اثْنَتَىْ عَشَرَةَ سَنَةً وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ، وَكُتِبَ لَهُ بِتَأْذِيْنِهِ فِيْ كُلِّ يَوْمٍ سِتُّوْنَ حَسَنَةً، وَبِإقاَمَتِهِ ثَلاَثُوْنَ حَسَنَةً

“যে ব্যক্তি বার বছর আযান দিবে, তার জন্য জান্নাত আবশ্যক হয়ে যাবে। আর তার আযানের বিনিময়ে প্রতিদিন ষাটটি এবং ইকামতের জন্য তিরিশটি পূণ্য লিখা হবে।” (ইমাম বুখারী স্বীয় তারীখ গ্রন্থে, ইবনে মাজাহ, ত্ববরানী ও হাকেম হাদীছটি বর্ণনা করেন। আলবানী হাদীছটি ছহীহ বলেন।)

পরিশেষে: আল্লাহ তায়ালার নিকট দুয়া করি তিনি যেন আমাদেরকে আযানের ডাকে সাড়া দিয়ে যথাযথভাবে পাঁচওয়াক্ত নামায পড়ার তাওফীক দান করেন। আমীন।

هذا وصلى الله على نبينا محمد وعلى آله وصحبه أجمعين

রচনায়: শাইখ মুহা: আব্দুল্লাহ আল কাফী

দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার। সৌদী আরব।

  উপরোক্ত বিষয়টির ওয়ার্ড ভার্সন  ডাউনলোড করুন। এবং বিভিন্ন ব্লগ, ওয়েব সাইটে পোস্ট দিন এবং এই ওয়েবসাইটির লিংক ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদিতে বন্ধুদের নিকট শেয়ার করে দ্বীন প্রচারে অংশ নিন। অসংখ্য ধন্যবাদ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *