••অল্প বয়সে চুল পাকলে করণীয়•• পাকা চুলে কলপ ব্যবহারের বিধান••

••অল্প বয়সে চুল পাকলে••

ছেলেদের চুল পাকার সমস্যা বেড়েই চলছে। প্রথমেই জানতে হবে কেন অল্প বয়সে চুল পাকে। এক্ষেত্রে প্রতিষেধকের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম।
•কেন চুল পাকে•

  • ১. স্পাইসি ফুড বেশি খাওয়া
  • ২. ঘুম কম হওয়া
  • ৩. চুলের যত্ন না করা,
  • ৪. কম দামি হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করা
  • ৫. জেনেটিক বা হরমোনের সমস্যা

••চুল পাকা রোধে যা করবেন••
শুরুতেই পরিচর্যা করলে ইনশাআল্লাহ অনেকাংশে চুল পাকা রোধ করা সম্ভব।

  • ◘সপ্তাহে দুই-তিন দিন তেল গরম করে তা মাথার স্কালপে ভালো করে ম্যাসাজ করতে পারেন। তেল চুলের পুষ্টি জোগায়।
  • ◘আপনার চুলের ধরন অনুযায়ী শ্যাম্পু বাছাইকরুন। শ্যাম্পু ব্যবহারকরার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
  • ◘চুলে খুশকি দেখা দিলে শুরুতেই সাবধান হোন। কারণ অতিরিক্ত খুশকির কারণেও অসময়ে চুল পাকে।
  • সে ক্ষেত্রে সপ্তাহে এক দিন লেবুর রস বা পেঁয়াজের রস স্কালপে দিয়ে ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেললে খুশকি কমে যাবে।
  • ◘প্রথম যখন দেখবেন চুল পাকতে শুরু করেছে তখন হেনা, ডিমের কুসুম ও টক দই একসঙ্গে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে মাথায় লাগান। এরপর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। হেনা ব্যবহারের ফলে চুল পাকা রোধ হবে এবং চুলের সাদা ভাবটা কম বোঝা যাবে ।
  • ◘যাঁরা খুব বেশি রোদে কাজ করেন অর্থাৎ চুলে সরাসরি রোদ লাগে তাঁদের চুল দ্রুত পাকার প্রবণতা দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে রোদে কাজ করলে মাথা ঢেকে রাখুন। অথবা রোদ থেকে ফিরে ক্রিম সমৃদ্ধ শ্যাম্পু দিয়ে চুল শ্যাম্পু করুন।
  • ◘অনেকে চুলে নানা ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করেন।যেমন: জেল, ক্রিম, কালার ইত্যাদি। এসব ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। সব সময়ভালো ব্র্যান্ড ব্যবহারকরা উচিত।
  • ◘ভিটামিন-ই ক্যাপসুলও চুলে ব্যবহার করতে পারেন। তবে সরাসরি ভিটামিন-ই ক্যাপসুল চুলে বা স্কালপে ব্যবহার না করাই ভালো। তেল বা জেলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। (Collected from – দৈনিক কালের কন্ঠ )

অল্প বয়সে চুল পাকলে আরও কিছু পরামর্শ:

বংশগত হলে, অর্থাৎ আপনার বাবা-চাচা-কাকা-দাদার মত করে আপনারও চুল দ্রুত সাদা হয়ে পরলে ব্যাপারটা একটু কঠিন। আর তা না হলে, এগুলো মেনে চলুনঃ

  • অতিরিক্ত পরিশ্রম, দুশ্চিন্তা করবেন না।
  • অতিরিক্ত চা-কফি-ড্রিংক্স খাবেন না।
  • বেশি তেলযুক্ত খাবার খাবেন না। বেশী মশলাযুক্ত খাবার খাবেন না।
  • বেশী টক বা এসিডিক খাবার খাবেন না।

এগুলো খাবেনঃ

আটার রুটি, সিরিয়াল, মাংস সব ধরনের, সয়া, গাঢ় সবুজ সবজি, হলুদ ফলমূল, সবুজ শাক, কলা, টমেটো, ফুলকপি, গরু-খাশির কলিজা-ফেশকা, দই, পাউরুটি, কাজু-পেস্তা আর কাঠ বাদাম, ডিম, চিংড়ি মাছ, গাজর।

এই প্যাকগুলো দিতে পারেনঃ

  • শুকনো আমলকি নারিকেল তেলে ডুবিয়ে সিদ্ধ করে তেলটা কালো করে সেটা ভালো করে ঘষে ঘষে মাথায় দেবেন।
  • নারিকেল তেল আর লেবুর রস মিশিয়ে মাথায় দিতে পারেন।
  • এক চা চামচ লবন এক কাপ ১৫ মিনিট জ্বাল দেয়া কালো চা-এর সাথে মিশিয়ে সেটা মাথায় ম্যাসাজ করতে হবে।
  • দুই চামচ মেহেদি, এক চামচ দই, এক চামচ মেথি গুড়া, তিন চামচ কফি, ২ চামচ পুদিনার রস, ৩ চামচ মিন্ট রস একসাথে মেখে মাথায় মেখে ৩ ঘন্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলবেন। (Collected from -দূরন্ত পথিক)

ইসলামী শরীয়াতে পাকা চুলে কাল খেজাব বা কলপ ব্যবহার করার বিধান কী?

ইসলামী শরীয়াতে পাকা চুলে কাল খেজাব  কলপ ব্যবহার করা হারাম।
চুলকে কাল রঙে রঞ্জিত করা হারাম। হাদীসে কাল খেজাব সম্পর্কে যে হুশিয়ারি উচ্চারিত হয়েছে তাতে একথাই প্রমাণিত হয় । এ প্রসঙ্গে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ” শেষ জামানায় একদল লোক কবুতরের বুকের রঙের ন্যায় কাল খেজাব ব্যবহার করবে । আর এ কারণেই তারা জান্নাতের কোন সুগন্ধি পাবে না।” আবু দাউদ ৪/৪১৯….।

অনেক চুলপাকা ব্যক্তিকে এ কাজ করতে দেখা যায়। তারা কাল রঙ দ্বারা সাদা চুল রাঙিয়ে নিজেদেরকে যুবক কিংবা অপেক্ষাকৃত কম বয়সী যাহির করে। এতে প্রতারণা, আল্লাহর সৃষ্টিকে গোপন করা ও মিথ্যা আত্ম তৃপ্তি ছাড়া আর কোন কিছুই হয় না। এর ফলে ব্যক্তিগত চালচলনের উপর নিঃসন্দেহে এক প্রকার কুপ্রভাব পড়ে। আর অন্য মানুষ এতে প্রতারিত হয়। নাবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাকা চুলে খেজাব লাগাতে বলেছিলেন মেহেদী বা এ ধরনের কোন জিনিস দ্বারা, যাতে হলুদ , লাল ইত্যাদি মৌলিক রঙ ফুটে ওঠে। তবে কাল রঙ দ্বারা রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনোই খেজাব লাগানোর অনুমতি দেন নাই ।

আবু বকর (রা:) এর পিতা আবু কুহাফা (রা:) কে মক্কা বিজয়ের দিন যখন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সামনে হাজির করা হয় তখন তাঁর চুল দাড়ি এত সাদা হয়ে গিয়েছিলো যে, তা সাগামা অর্থাৎ কাশ ফুলের ন্যায় ধবধবে দেখাচ্ছিল। তখন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে দেখে বলেছিলেন, “তোমরা কোন কিছু দ্বারা এটা পরিবর্তন করে দাও। তবে কাল রঙ থেকে বিরত থাকো।” মুসলিম ৩/১৬৬৩ ।

এভাবে নারীদের চুলে কলপ ব্যবহার করার বিধান পুরুষদের চুলে কলপ ব্যবহার করার মতই।
এই দুনিয়াতে আমাদের মধ্যে নিষিদ্ধ যে কোন বস্তুর প্রতি আকর্ষণ সিদ্ধ যে কোন বস্তুর তুলনায় অতুলনীয় ভাবে বেশী। সকল রঙকে চুলে লাগানোর জন্য বৈধ করা হয়েছে মাত্র একটি রঙ বাদে। অথচ এই একটি রঙের প্রতি আকর্ষণ অন্য সকল রঙের তুলনায় হাজারো গুন বেশী। ইচ্ছা করলেই আমরা শরীয়ত বিরোধী এ কাজ থেকে বেচে থাকতে পারি। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন। আমীন। (Collected from -ব্লগার হেডমাষ্টার সাহেব, সামহয়্যার)

গ্রন্থনা ও সম্পাদনা: আব্দুল্লাহিল হাদী

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *